খোলা বাজার থেকে বেশি দামে চাল কিনে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে যশোরের ১৫ হাজার ২০০ মানুষের কাছে প্রতিদিন বিক্রি করা হচ্ছে ৩০ টাকা দরের চাল।

আজ বৃহস্পতিবার থেকে বিক্রি শুরু হচ্ছে। ৩০ টাকার এই চাল বিক্রি করবেন ওএমএস ডিলাররা। এবার টিসিবির কার্ডধারীরাও এই চাল কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রতিদিন ৭৬ মেট্রিকটন চাল বিক্রি করা হবে যশোর জেলায়। চাল কেনায় অগ্রাধিকার পাবেন টিসিবির কার্ডধারীরা। একজন একদিনে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন।

দীর্ঘদিন ধরে চালের ঊর্ধ্বগতির বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষকে মূল্য সহায়তা প্রদান করতে সরকার ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তর বাজার মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা রোধ করে নিম্ন আয়ের মানুষকে মূল্য সহয়তা দেয়া এবং বাজারদর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুক্র ও শনিবার এবং সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত এ চাল বিক্রি করা হবে।

যশোর পৌরসভার ১৪ টি স্থানে প্রতিদিন ২২ মেট্রিকটন, মণিরামপুর, কেশবপুর, নওয়াপাড়া, বেনাপোল, ঝিকরগাছা, বাঘারপাড়া ও চৌগাছা পৌরসভার ২৬ টি স্থানে ৫০ মেট্রিকটন এবং শার্শা উপজেলার দু’টি স্থানে চার মেট্রিকটন করে চাল বিক্রি করা হবে। টিসিবির কার্ডধারীরাও চাল কেনার সুযোগ পাবেন।

খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি ডিলার পয়েন্টে ক্রেতাদের পৃথক দু’টি লাইন থাকবে। একটি লাইনে দাঁড়াবেন সাধারণ ক্রেতা, অপর লাইনে টিসিবির কার্ডধারীরা। টিসিবির কার্ডধারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাল দিতে হবে। কারণ টিসিবির কার্ডধারীরা মাসে দু’বার পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন। অপরদিকে, সাধারণ ক্রেতারা প্রতিদিন কিনতে পারবেন পাঁচ কেজি করে চাল। ডিলারের কাছে একদিনের চালের বরাদ্দ শেষ হয়ে গেলে ক্রেতাকে পরের দিন আসার অনুরোধ করতে হবে। টিসিবির কার্ডধারীদের চাল প্রদানের পর কার্ডের পিছনে নমুনা সিল দিতে হবে অথবা পাঞ্চিং মেশিন দিয়ে কার্ডের উপরে প্রতিবারের জন্য একটি ছিদ্র করে দিতে হবে। ওএমএস বিক্রয় কেন্দ্র সহজে চেনার জন্য দোকানের সামনে লাল রঙের ব্যানার ঝুলিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন সকাল ৯ টা হতে বিকেল ৫ টা এমনকি চাল বিক্রি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রম চলমান থাকবে। ওইসময় তদারকি কর্মকর্তারা ওএমএস কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।

যশোর পৌরসভায় পূর্ববারান্দিপাড়া ঢাকারোডে আবুল কাশেম বাবু, পূর্ববারান্দি সরদারপাড়ায় হুমায়ুন কবির নাহিদ ও সাবিদ হাসান, ঘোপ সেন্ট্রাল রোডে রবিউল ইসলাম, হাটখোলা রোডে শ্যামল কুমার সাহা, পুরাতন কসবা আব্দুল আজিজ সড়কে হাসান ইকবাল, ধর্মতলায় রোকন ব্যাপারি, ষষ্টিতলাপাড়া মুজিব সড়কে লাইজুজামান, রেলবাজারে বাহাউদ্দিন, রেলরোড চারখাম্বার মোড়ে তোতা মিয়া, বেজপাড়া গুলগোল্লার মোড়ে গোলাম মোস্তফা, শংকরপুর জমাদ্দারপাড়ায় ইব্রাহিম খাঁন, বকচর হুঁশতলায় সালাউদ্দিন, বিসিক শিল্পনগরী ঝুমঝুমপুরে নিতাই চন্দ্র সাহা ও পশ্চিম বারান্দি নাথপাড়ায় ইউসুফ আলী বিশ্বাস ৩০ টাকা দরের চাল বিক্রি করবেন।

এর বাইরে কেশবপুরের চারআনি বাজারে ওয়াহেদুজ্জামান, হাসপাতাল মোড়ে স্বপন মুখার্জি ও চিংড়া মোড়ে বিষ্ণুপদ দাস, মণিরামপুরের উত্তর মাথায় মোন্তাজ বিশ্বাস, মণিরামপুর আদর্শ সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আজিজুর রহমান, মণিরামপুর উত্তর মাথা বাসস্ট্যান্ডে রবিউল ইসলাম ও মণিরামপুর উত্তর মাথায় সুমন কুমার দাস, অভয়নগরের নওয়াপাড়ায় আলী হায়দার, ভাঙ্গাগেট বাজারে গোলাম জহিরুল হক লিখন, নুরবাগ-কালাহাটা, নওয়াপাড়া বাজারে দেলোয়ার হোসেন, নতুন বাসস্ট্যান্ড ও নওয়াপাড়ায় কেএম নাজমুল ইসলাম বাবলু, বাঘারপাড়ার চৌরাস্তা, স্বর্ণ পট্রি রোডে শচীন্দ্র নাথ বিশ্বাস, দোহাকুলা বাজারে শেখ রাইসুল ইসলাম রানা ও থানা বাজারে বজলুর রহমান, ঝিকরগাছা রোড, চৌগাছায় শেখ মইনুল হাসান বাচ্চু, হাইস্কুল রোডে মাহাতাব উদ্দিন, নিরিবিলিপাড়া রোডে শাহাজ্জেল হোসেন ও হাসপাতাল রোডের মেহেদী হাসান, ঝিকরগাছার বটতলা মোড়ে আবুল হাসান মুন্না, অগ্রণী ব্যাংক এর নীচে হাসান মাহমুদ মুকুল ও গোহাটায় সৈয়দ ইমরানুর রশিদ, বেনাপোলের ভান্ডারি মোড়ে মাহাতাব উদ্দিন, বেনাপোল রজনী ক্লিনিকের সামনে আব্দুল মালেক, কাগজপুকুর বাজারে জুলফিকার আলী ও ছোটআঁচড়া মোড়ে জুলফিকার আলী মন্টু ৩০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি করবেন।

KKHC 2

যশোর পৌরসভায় প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন ১.৫৭, কেশবপুরে ২, মণিরামপুরে ২, অভয়নগরে ২, বাঘারপাড়ায় ২, চৌগাছায় ১.৫, ঝিকরগাছায় ২, এবং বেনাপোল ও শার্শায় ২ মেট্রিকটন করে চাল বিক্রি করতে পারবেন।

ওএমএসের পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্ধারিত ডিলারদের কাছ থেকে চাল কিনতে পারবেন কার্ডধারীরা। সেক্ষেত্রে হালনাগাদ কার্ড থাকতে হবে। ওই কার্ড যাচাই হতে হবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে। যাদের কার্ড এখনো যাচাই হয়নি তারা কোনোভাবেই চাল কিনতে পারবেন না। জেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১ লাখ ৫ হাজার ৬৫৫ জন ৩০ টাকা দরে চাল কিনতে পারবেন। জেলার ৯৩ টি ইউনিয়নে ২৬২ জন ডিলার এই চাল বিক্রি করবেন।